করোনার চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (আইসিইউ) শয্যা সংকট এখন চরমে।
হাসপাতালগুলোর ৬৬টি আইসিইউ বেডের মধ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফাঁকা আছে মাত্র চারটি। সেগুলো চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, যার মধ্যে আবার দুইটি সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে জরুরি পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে আইসিইউ বেডগুলোতে রোগী ভর্তি হতে শুরু করে। এখন সেগুলোতে তো রোগী আছেই, সেইসঙ্গে ফাঁকা নেই ৬০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ডও।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও করোনা বিষয়ক স্বাচিপ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন একাধিক রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউ শয্যার জন্য অপেক্ষায় থাকে। সেগুলো খালি হয় কেবল তখনই যখন কোনো বেডের রোগী মারা যায়।’
গত বছরও এ সময় করোনা রোগী বাড়তে থাকায় চট্টগ্রামে আইসিইউ সংকট দেখা দেয়। চিকিৎসকরা বলছেন, এবারও এমন পরিস্থিতি যে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সাধারণ বেডে রেখেই সেবা দেয়া লাগছে।
গত বছর সংক্রমণ বাড়ার পর বেসরকারি উদ্যোগে জেলায় বেশ কয়েকটি আইসোলেশন সেন্টার ও ফিল্ড হাসপাতাল খোলা হয়। পরে রোগী কমতে থাকায় সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার সেগুলো একে একে চালু করা হচ্ছে। এরইমধ্যে ফিল্ড হাসপাতাল, সিটি করপোরেশনের আইসোলেশন সেন্টার ও পতেঙ্গা বন্দরের আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে।
সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ৫০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার চালু করেছি। ধীরে ধীরে এর সক্ষমতা বাড়ানো হবে। বিনামূল্যে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’
বেসরকারির পাশাপাশি সরকারি হাসপাতালগুলোতে সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানালেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, বন্ধ থাকা রেলওয়ে হাসপাতাল ও হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতাল চালুর প্রক্রিয়া চলছে। সেগুলোতে দুইশর মতো শয্যা আছে। চালু হলে বেড সংকট কিছুটা কমবে।
সিভিল সার্জন সুত্রে, চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪৭৩ জনের। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হয়েছে ৪৩ হাজার ১৮৮ জন।
সবশেষ চারজনসহ জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৪০৬ জন।